আমি গত কয়েক দিন ধরে একটা কাজ করবো বলে ভাবছি।কিন্তু কাজটা কোনোভাবে করাই হচ্ছেনা।কী এক যন্ত্রনা! শেষে খাতা-
কলম নিয়ে বসে পড়লাম।মাথায় কিছু আইডিয়া আসছে।কীভাবে এই গড়িমসি ভাবটা দূর করা যায় খাতায় লিখে ফেললাম সেগুলো।
আমার আইডিয়াগুলো ছিলো-
১.যে কাজটা করছি সেটাকে বিশ্লেষণ করবো।আগে বুঝতে হবে কাজটা আমি কেন করছি,কোন লক্ষ্য অর্জনের জন্যে করছি আর আমার জীবনে এর প্রভাব কী। যেমনঃ আমি পড়ছি কারণ আমি বড় একটা চাকরি পেতে চাই।এক চাকরি আমার জীবনকে পরিবর্তন করে দিতে পারে।
২.খেয়াল করবো যে কাজে গড়িমসি করছি তা আমার জীবন আর সন্তুষ্টির সাথে কতটুকু সঙ্গতিপূর্ণ?সেটার প্রতি কি আমার
আবেগ জড়িত?
সেটাকে কি সত্যিই আমি মনেপ্রাণে চাই?
সেটা কি আমার মূল্যবোধের সাথে যায়?
এই বড় চাকরি এই সবগুলো প্রশ্নেরই পজিটিভ উত্তর দেয়।তাই বড় চাকরি পেতে আমি পড়াশোনা করছি।
৩. আমাকে মাঝমধ্যেই বিমর্ষতা আর অনাগ্রহীতা ঘিরে ধরে।সেক্ষেত্রে আমি তা দূর করার জন্যে যা যা লাগে সব করবো।
যেমনঃব্যায়াম,ঘুম বা শখের কাজ করবো তাতে আমার মন ভালো হবে আর সঙ্গে সঙ্গেই কাজের কাজটা করা শুরু করে দেবো।
৪.অপ্রয়োজনীয় ও মনোযোগ ছিন্নকারী জিনিসগুলো দূরে রাখবো।যেমনঃ মোবাইল। আর যা পড়ছি তার বাইরে চোখের সামনে আর কোনো বই রাখবো না।
৫.যে কাজ বা পড়া করবো তার একটা সামগ্রিক আউটলাইন তৈরি করবো।সিলেবাস যাকে বলে। আর পড়তে বসে আগামী ৩-৪ ঘন্টায় কী কী পড়বো তার একটা তালিকা করবো।
৬.টু-ডু লিস্ট তৈরী করবো এবং এই লিস্টকে ৩ টা করে কাজে ভাগ করে নেব।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ৩ টা কাজ সবার আগে,তারপর পরের ৩ টা এভাবে রাখুন। ৭.প্রোমোডোমো কৌশলে কাজ করবো।এ কৌশলে একটানা ২৫ মিনিট কাজ করে ৫ মিনিট রেস্ট আবার ২৫ মিনিট কাজ করে ৫ মিনিট বিশ্রাম নেবো।তাতে মনোযোগও থাকবে আবার কাজের মানও বাড়বে।
আর কোনো কাজ শেষ করতে পারলে নিজকে পুরস্কৃত করবো আমার প্রিয় খাবার চকোলেট দিয়ে।
৮.গেট দ্যা থিংস ডান পদ্ধতি অনুসরণ করবো।এ পদ্ধতিতে একটা কাজ পুরোপুরি শেষ না করে অন্য কাজ করা নিষেধ। এই পদ্ধতি মনোযোগ বাড়ায়।
৯. সব কাজে পারফেক্ট হওয়ার চিন্তা করবোনা।কারণ এটা অতিরিক্ত চাপের সৃস্টি করে। আর কাজে অনীহা আর ভীতির সৃস্টিকরে।
১০. কাউকে আমার উপর নজর রাখতে বলবো।এটা খুবই কার্যকরী একটা পদ্ধতি।কারণ অনেক সময় আমার কাজ করতে ইচ্ছা
করবেনা।এক্ষেত্রে কেউ আমার কাজে নজর রাখলে জোর করে হলেও কাজটা আমাকে করতে হবে।
১১.নিজকে অতীতের জন্যে ক্ষমা করে দেবো।কারণ আমার অতীত আমাকে দুঃখ দেবে আর তা নতুন উদ্যম সৃস্টির অন্তরায়।
১২. দীর্ঘসূত্রিতা এড়াতে সময় ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দেবো। একটা বেঁধে দেওয়া সময়ের পর ঐ কাজটা আর করবো না।
১৩. আউটসাইড দ্যা বক্সে চিন্তা করবো।আত্মবিশ্বাস থাকলে কাজ অনেক দ্রুত করা যায়।তাই সবকিছুতে জেতার মানসিকতা
তৈরি করতে হবে।
এভাবে ৩ সপ্তাহ কাজ করার পর দেখা গেলো আমার আর প্রক্রাস্টিনেশনের সমস্যা হচ্ছেনা।তাই শেয়ার করে ফেললাম আপনাদেরসাথে। আপনারাও কিন্তু এগুলো জীবনে প্রয়োগ করতে পারেন।পজিটিভ রেজাল্ট পাবেন;সে গ্যারান্টি আমি দিচ্ছি। শুভকামনা।
© মাহতাব আব্দুল্লাহ মঞ্জুর